মাদকসহ রাজধানী থেকে গ্রেপ্তার হওয়া মডেল ফারিয়া মাহবুব পিয়াসা এবং মরিয়ম আক্তার মৌকে তিনদিনের রিমান্ডে পেয়েছে পুলিশ। সোমবার (২ আগস্ট) দুই মডেলকে আদালতে হাজির করে প্রত্যেককে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করলে ঢাকা মহানগর হাকিম শহিদুল ইসলাম তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
কড়া নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে ঢাকার সিএমএম আদালতে আনা হয় আলোচিত ফারিয়া মাহবুব পিয়াসা এবং মরিয়ম আক্তার মৌকে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, পিয়াসা এবং মৌ এই দুই জন দীর্ঘদিন যাবৎ তাদের নিজ বাসায় মাদকের আড্ডা বসিয়ে নিরীহ মানুষের সাথে প্রতারণা ও ব্লাকমেইল করতো।
তাই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ মৌকে মোহাম্মদপুর থানায় দায়ের করা মাদক মামলায় এবং পিয়াসাকে গুলশান থানায় দায়ের করা মামলায় দশ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে আদালত দুই জনের তিন দিন করে রিমান্ড মন্জুর করেন। আসামিপক্ষের আইনজীবীরা আদালতকে জানান, আসামিদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক এই মামলা এবং গ্রেপ্তারি অভিযান পরিচলনা করেছে পুলিশ। তাই তারা রিমান্ডের বিরোধিতা করে আদালতের কাছে জামিন প্রত্যাশা করেছিলেন।
রোববার রাত সাড়ে ন’টার দিকে গোয়েন্দা পুলিশের গুলশান বিভাগের একটি দল বারিধারার বাসায় অভিযান চালিয়ে মডেল পিয়াসাকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় তার হেফাজত থেকে ৭৮০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট, বিভিন্ন ব্রান্ডের ৬ লিটার মদ ও সিম্বা ব্রান্ডের ৪টি প্রিমিয়ার বিয়ার ও সিসা তৈরির কাঁচামাল জব্দ করা হয়।
এরপর, রাত বারোটার দিকে মোহাম্মদপুর থানা এলাকা থেকে মরিয়ম আক্তার মৌকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা সাইবার এন্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের একটি দল।এ সময় তার হেফাজত থেকে ৭৫০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট ও বিভিন্ন ব্রান্ডের ১২ লিটার মদ জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়।
পরে এক ব্রিফিংয়ে গোয়েন্দা বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, পিয়াসা ও মৌ একই সংঘবদ্ধ চক্রের সদস্য। মডেলিংয়ের নামে তারা উচ্চবিত্ত পরিবারের সন্তানদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলতেন। এরপর পার্টি করার নাম করে তাদের বাসায় ডেকে নিতেন। সেখানে মদ-ইয়াবাসহ বিভিন্ন ধরনের মাদক খাইয়ে ‘আপত্তিকর’ ছবি তুলতেন। পরে সেগুলো দেখিয়ে ব্ল্যাকমেইল করে টাকা বা নানা সুবিধা আদায় করতেন।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের মে মাসে বনানীর রেইনট্রি হোটেলে দুই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী ধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন। ওই ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার এজাহারে নাম ছিল পিয়াসার। প্রথমে মামলা করতে ভুক্তভোগীদের সহযোগিতা করেছিলেন পিয়াসা। কিন্তু সেই পিয়াসার বিরুদ্ধেই আবার মামলা তুলে নেয়ার হুমকির অভিযোগে জিডি করেছিলেন ভুক্তভোগী।